Update

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

নিম পাতা কোন রোগের মহৌষধ

 আমাদের পা চারপাশে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য ঔষধি গাছ। এই ঔষধি গাছ গুলোর মধ্যে কোনটি আমরা চিনতে পারি আবার কোনোটি আমরা চিনতে পারিনা। তেমনি একটি বহুল পরিচিত ঔষধি গাছ হলো নিম গাছ।এই নিমগাছ একটি অতি প্রয়োজনীয় এবং খুবই উপকারী একটি ঔষধি গাছ। আমরা আজকে জানবো নিম পাতা কোন রোগের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। শুধু নিমপাতা নয় এর মূল, ফুল,কান্ড,ডাল এবং ফল বিভিন্ন প্রকার ওষুধ তৈরিতেও ব্যাবহার করা হয়।

নিম পাতা কোন রোগের মহৌষধ


নিম পাতার পরিচিতি:

নিম গাছের পাতা, ফুল, মূল, কান্ড, ছাল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করতে হলে নিম গাছের সাথে পরিচিত হতে হবে। আমাদের চারপাশে এমনকি আমাদের বাড়ির আঙিনায় এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। আর নিম গাছ আমাদের বাড়ির পাশে থাকা বা আমাদের বাড়িতে থাকাও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। নিম পাতা দেখতে আকৃতিতে ছোট এবং চারিপাশ খাচ কাটা খাচ কাটা । নিম গাছের ডাল এবং পাতা দুইটির স্বাদই তিতা।

নিম পাতা কোন রোগের মহৌষধ::

নিম পাতা আকৃতিতে ছোট হতে পারে কিন্তু এই নিমপাতা শুধু ওষুধ না অনেক রোগের মহা ওষুধও বলা চলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক নিম পাতা কোন রোগের মহা ঔষধ।

এলার্জির ঔষধ নিম পাতা:: এলার্জি একটা বিরক্তিকর কারণ চুলকাতে কার ভালো লাগে? এ এলার্জি একেবারে নির্মূল করা সম্ভব নয় এটি বারবার ফিরে আসে। এলার্জি আমরা একেবারে নির্মূল করতে না পারলেও একথা সত্যি যে আমরা চাইলে একেবারে প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরোয়া ভাবে এই এলার্জি বারবার ফিরে আসাটা রোধ করতে পারি। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই উপায়টি- প্রথমের নিম পাতাকে রোদে শুকাতে হবে। তারপর পাতাগুলোকে ভালোভাবে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিতে হবে। এরপর ১ চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিমপাতার গুঁড়া ও এক চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ঘণ্টা পর ভালোভাবে নেড়ে নিতে এবং প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাত্রে শোয়ার আগে সেই পানীয় পান করুন। ভাবে ২১ দিন একটানা খাওয়ার পর নিজেই পরীক্ষা করুন এলার্জির ঔষধ নিম পাতা কিভাবে  মহৌষধ কাজ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিম পাতা :: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিম পাতা খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম। নিমপাতা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে । এছাড়াও নিম পাতা ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন ৩-৪ নিম পাতা বেটে রস বের করে খেতে পারেন তাহলে আশা করা যায় আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

শরীরে কৃমি নিয়ন্ত্রণে নিম পাতা: নিয়মিত এক সপ্তাহ খালি পেটে নিম পাতার গুঁড়া বা ছাল চূর্ণ পানিতে ভিজিয়ে সেবন করলে কৃমির উপদ্রব এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, যে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।

লিভারের স্বাস্থ্যরক্ষায় নিম পাতা: নিয়মিত সামান্য পরিমাণ নিমপাতার গুঁড়া পানিতে ভিজিয়ে খেতে খেতে পারলে কোস্ট কাঠিন্য সহ লিভারের নানা সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

পাতলা পায়খানায় নিম পাতা : পাতলা পায়খানা হলে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ ফোটা নিম পাতার রস পানিতে পানিতে মিশিয়ে পান করলে প্রাণ ঠিক হয়ে যায়।

বুকের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে নিম পাতা : নিম পাতা গুঁড়ো করে নিলে কত কাজেই না লাগে। গর্ভবতী, শিশু ও বৃদ্ধ ব্যতীত কারো যদি বুকে কফ জমে ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে ৩০ ফোটা নিম পাতার রস সামান্য গরম পানিতে মিশিয়ে দিনে ৩/৪ বার খেলে বুকের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

দাত ও মাড়ির সমস্যা সমাধানে : নিম পাতার ডাল কে মিসওয়াক হিসাবে ব্যবহার করলে দাঁত ও মাড়ির ভালো থাকে।

ওজন কমাতে নিমের পাতা : নিয়মিত নিম পাতার রস খেলে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই দৈনন্দিন আপনার খাবারের শার্টের নিমের পাতাও রাখতে পারেন।

হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণে নিম পাতা : নিম পাতায় থাকে অ্যান্টিহিস্টামিন উপাদান। যা আমাদের রক্তনালীকে সরাসরি প্রসারিত করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এক্ষেত্রে আপনাকে নিয়মিত নিম নিম পাতার রস বের করে খেতে হবে।

আলসার চিকিৎসায় নিম পাতা : যাদের আলসার আছে তারা নিয়মিত নিম পাতা সেবন করলে ভালো ফল পেতে পারেন, তারা নিমপাতার রস আলসার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার : চর্ম রোগ বিপদজনক হওয়ার আগে আসুন আমরা সতর্ক হই এবং চর্মরোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করি। নিমপাতা বেটে পেস্ট করে চর্মরোগ আক্রান্ত স্থানে সপ্তাহে ৩-৪ দিন লাগালে চর্ম রোগ থেকে খুব দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়।

ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধে নিম পাতা : নিম পাতা গ্যাডোনিন উপাদান সমৃদ্ধ ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও মশার উপদ্রব কমাতে নিমপাতা সিদ্ধ করে ওই পানি স্প্রে বোতলে করে স্প্রে করলে খুবই কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায়।

       

এছাড়াও নিম পাতা কোন রোগের মহৌষধ তা হলো :

নিম পাতা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ সহায়তা করে, নিম পাতার গুঁড়া ব্যবহার করে মাথার খুশকি দূর করা যায়, এছাড়াও আরও অনেক অনেক নিম পাতার উপকারিতা অনেক।

নিম পাতার অপকারিতা : নিম পাতা আমাদের অনেক রোগের কার্যকরী মহা ওষুধ হলেও নিম পাতা ব্যবহারে আমাদের কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তা না হলে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা। যেমন :

⦁ মাত্রা অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে কোন কোন সময় এটা বন্ধ্যাত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

⦁ নিম পাতা যেহেতু উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে সেহেতু  লো প্রেসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য নিম পাতা সেবনে সতর্ক থাকা উচিত।

⦁ নিম পাতা গর্ভপাত ঘটাতে সহায়তা করে তাই গর্ভবতী মহিলারা নিমপাতা ব্যবহার করা উচিত নয়

⦁ অতিরিক্ত পরিমাণে খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে স্টোমাটাইটিসের মতো অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

⦁ নিম পাতার নির্যাসের প্রভাব পুরুষদের যৌন শক্তিকে কিছুটা  প্রভাব পড়ে।

সর্বোপরি নিমপাতার অপকারিতা চাইতে উপকারিতা বেশি।

নিম পাতার ব্যাবহার : নিম পাতার ব্যবহারের বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে নিম্নে তা তুলে ধরলাম -

⦁ নিম পাতা কি ভিজিয়ে পানি পান করা যায়

⦁ নিম পাতা কে পানি দিয়ে সিদ্ধ করে ওই পানি ব্যবহার করা যায়

⦁ নিম পাতা কে পিসে পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করা যায়।

⦁ নিম পাতাকে ক্যাপসুল হিসেবে ব্যবহার করা যায় বর্তমানে অনেক কোম্পানি নিমপাতার ক্যাপসুল বিক্রি করে।

⦁ নিম পাতাকে রোদে শুকিয়ে পাউডার করেও ব্যবহার করা হয়।

⦁ বর্তমানে বিভিন্ন দোকানে এখন নিম পাতার তেল পাওয়া যায়, তাই তেল হিসেবেও নিমপাতা কে ব্যবহার করা যায়।

নিম পাতা সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর

প্রশ্ন- নিম পাতার উপকারিতা কি?

উত্তরঃ নিম পাতার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না এই যেমন - 

আপনি যদি মুখের ব্রণ নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে থাকেন, তাহলে চিন্তা দূর করে জেনে নিন ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার যে কতটা কার্যকরী তা বলে শেষ করা যাবে না।

প্রশ্ন- নিম পাতা কি চর্মরোগ দূর করে?

উত্তরঃ অবশ্যই নিম পাতা দিয়ে চর্ম রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার কিভাবে করে তা হল নিম পাতা থেকে তেল সংগ্রহ করে শরীরের আক্রান্ত স্থানে লাগালে যেকোনো ধরনের ত্বকের চুলকানি এলার্জি চর্মরোগ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ভালো হয়ে যায়।

আজকে আমরা আমাদের কনটেন্টে জানতে পারলাম নিম পাতা কোন রোগের মহৌষধ নিম পাতার পরিচয় নিম পাতা দেখতে কেমন হয় সর্বোপরি নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ করার জন্য এর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু রয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা করলাম। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে এরপরও যদি আপনাদের কোন  থাকে জানা তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে প্রশ্ন থাকে জানাবেন।


Post a Comment

0 Comments